বিবরণ |
আমার আছে জল"বইটির প্রথমের কিছু অংশ: রেল স্টেশনের এত সুন্দর নাম আছে নাকি? “সােহাগী”। এটা আবার কেমন নাম? দিলু বললাে – আপা, কি সুন্দর নাম দেখেছ? নিশাত কিছু বললাে না। তার ঠাণ্ডা লেগেছে। সারারাত জানালার পাশে বসে ছিলাে। খােলা জানালায় খুব হাওয়া এসেছে। এখন মাখ। ভারভার। কিছুক্ষণের মধ্যেই হয়তাে নাক দিয়ে জল ঝরতে শুরু করবে। দিলু বললাে – আপা, স্টেশনের নামটা পড়ে দেখ না। প্লীজ। পড়েছি। ভাল নাম। দিলুর মন খারাপ হয়ে গেলাে। সে আশা করেছিলো নিশাত আপাও তার মত অবাক হয়ে যাবে। চোখ কপালে তুলে বলবে – ও মা, কেমন নাম! কিন্তু সে আজকাল কিছুতেই অবাক হয় না। কথাবার্তা বলে স্কুলের জিওগ্রাফী আপার মত। নিশাত বললাে - দিলু, দেখ তাে বাবু কোথায়? দুধ খাবে বােধহয়। দিলু বাবুকে কোথাও দেখতে পেলাে না। এমন দুষ্ট হয়েছে। ওয়েটিং রুমে যাপটি মেরে বসে আছে হয়তাে। কাছে গেলেই টু দেবে। ধরতে গেলেই আবার ছুটে যাবে। ওয়েটিং রুমের সামনে একগাদা জিনিসপত্রের সামনে বাবা দাঁড়িয়ে আছেন। বিরক্ত মুখ। তিনি দিলুকে দেখেই বললেন - একেকজন একেক দিকে চলে গেছে। ব্যাপারটা কি? তাের মা কোথায়? জানি না তাে। তাের মাকে খুঁজে বের কর। আমি পারব না বাবা, আমি বাবুকে খুঁজছি। ' বাবুকে খুঁজলে তাের মাকে খোঁজা যাবে না – এরকম কথা কোথাও লেখা আছে? সবাই আজ এরকম করে কথা বলছে কেন? কোথাও বেড়াতে গেলে সবার খুব হাসিখুশি থাকা উচিত। কিন্তু এখানে সবাই কেমন রেগে কথা বলছে। রাগটা তার উপরই। ট্রেনে মা তিনবার বললেন – দিলু পা নাচাচ্ছ কেন? পা নাচানো একটা অসভ্যতা। চুপ করে বস। পা নাচাননার মধ্যে আবার সভ্যতা-অসভ্যতা কি? যত আজগুবি কথা। |