0

কার্টে কোনো বই নেই

product image page image
↑ একটু পড়ে দেখুন
জননী
Wishlist

Wishlist

৳২৭০ ৳৩২০ ১৬% ছাড়!
  • ৭ দিনের রিটার্ন পলিসি
  • ক্যাশ অন ডেলিভারি এভেইলেবল
  • স্টক:২০টি কপি স্টকে আছে
ISBN 9844584078
পৃষ্ঠা সংখ্যা 208
সংস্করণ 2022
দেশ বাংলাদেশ
ভাষা বাংলা
বিবরণ গ্রান্ড ট্রাঙ্ক রোড এখানেই সরলরেখায় গ্রাম-গ্রামান্তরের দিকে চলিয়া গিয়াছে। ট্রাঙ্ক রোডের পাশেই সরু গ্রামের পথ। কয়েক মিনিট হাঁটিলেই প্রথমে পড়ে আলী আজহার খাঁর বস্তি। সম্মুখে একটি বড় দহলিজ। বাম পাশে ছোট ডোবা। পূর্বধারে প্রতিবেশীদের খড়োঘর। কয়েকখানা কলাগাছের নীলাভ পাতা চালের ভিতর উঁকি মারিতেছে। উঠানে কেহ বোধহয় কলাগাছ রোপণ করিয়াছিল। আসন্ন বৈকালে এই অঞ্চল ভয়াবহ ঠেকে। জনবিরল গ্রাম। অরণ্যানীর ছায়াভাস আগাছার জঙ্গলে সর্বক্ষণ কালো দাগ আঁকিয়া রাখে। বর্ষাকালে পথঘাট দুর্গম। ঝড়ে পাতাপুতি, হেলানো বাঁশবনের কঞ্চি আর কাদায় রাস্তা চলা বিপজ্জনক। বেতবনের ঝোপ-নিষ্ক্রান্ত বিষাক্ত সাপ দিনেও আশেপাশে বিচরণ করে। আলী আজহার খাঁকেও এই পথে হাঁটিতে হয়। লাঙল কাঁধে হালের বলদ দুটিকে ভর্ৎসনার আহ্বান দিতে দিতে বহুদিন দেখা গিয়াছে সে আনমনে পথ হাঁটিতেছে। আজ এই খাঁ-পরিবারের কোনো ছেলেকে দেখিয়া বুঝা মুশকিল, একশ বছর আগে তাহাদের পূর্বপুরুষেরা বাঙালি ছিলেন না। আলী আজহার খাঁর চেহারা পাট্টা জোয়ানের। রঙ ফর্সা। শুধু এই অবয়বে অন্যান্য প্রতিবেশীদের কাছে সে বৈশিষ্ট্য-পৃথক। নচেৎ কিষাণ-পল্লীর ভিতর তার অন্য কোনো মাহাত্ম্য-গুণ নাই, যার জন্য শতজনের মধ্যে সে প্রথমে কাহারো দৃষ্টি আকর্ষণ করিতে পারে।
লেখকের নাম শওকত ওসমান
পরিচিতি তাঁর পৈতৃক নাম শেখ আজিজুর রহমান। নাটক, গল্প, উপন্যাস, প্রবন্ধ, রম্যরচনা, রাজনৈতিক লেখা, শিশু-কিশোর সাহিত্য সর্বত্র তিনি উল্লেখযোগ্য অবদান রেখে গেছেন। মুক্তিযুদ্ধ ও ধর্মনিরপেক্ষতার পক্ষে তিনি ছিলেন এক উচ্চকিত কণ্ঠের অধিকারী। জন্ম -১৯১৭ খ্রিষ্টাব্দের ২ জানুয়ারি পশ্চিম বঙ্গের হুগলী জেলার জেলার সবল সিংহপুর গ্রামে তিনি জন্মগ্রহণ করেন।বাংলাদেশের একজন চিন্তক, লেখক ও কথাসাহিত্যিক। পিতা শেখ মোহাম্মদ এহিয়া, মাতা গুলজান বেগম। পড়াশোনা করেছেন মক্তব, মাদ্রাসা, কলেজ ও কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে। তিনি কলকাতার আলিয়া মাদ্রাসায় পড়ালেখা শুরু করলেও পরবর্তীকালে সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজ ও অর্থনীতি বিষয়ে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতক ডিগ্রি সম্পন্ন করেন। কিন্তু একই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলায় এমএ ডিগ্রি লাভ করেন। আইএ পাস করার পর তিনি কিছুদিন কলকাতা করপোরেশন এবং বাংলা সরকারের তথ্য বিভাগে চাকরি করেন। এমএ পাস করার পর ১৯৪১ সালে তিনি কলকাতার গভর্নমেন্ট কমার্শিয়াল কলেজে লেকচারার পদে নিযুক্ত হন। ১৯৪৭ সালে তিনি চট্টগ্রাম কলেজ অফ কমার্সে যোগ দেন এবং ১৯৫৮ সাল থেকে ঢাকা কলেজে অধ্যাপনা করে ১৯৭২ খ্রিষ্টাব্দে স্বেচ্ছা অবসরে যান। চাকরি জীবনের প্রথমদিকে কিছুকাল তিনি ‘কৃষক’ পত্রিকায় সাংবাদিকতাও করেন। প্রয়াত হুমায়ুন আজাদ শওকত ওসমানকে বলতেন 'অগ্রবর্তী আধুনিক মানুষ'। ১৯৪৭ খ্রিষ্টাব্দে দেশ বিভাগের পর তিনি চলে আসেন পূর্ববঙ্গে।বাংলাদেশের সাহিত্য, সংস্কৃতি ও মুক্তবুদ্ধির আন্দোলনে জীবনব্যাপী অবদানের স্বীকৃতি স্বরূপ তিনি একুশে পদক, বাংলা একাডেমি পুরস্কার ও স্বাধীনতা দিবস পুরস্কার - এই তিনটিতেই ভূষিত হয়েছিলেন। ক্রীতদাসের হাসি তাঁর একটি জনপ্রিয় ঐতিহাসিক উপন্যাস। তাঁর জনপ্রিয় গ্রন্থ গুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্যঃ জননী, জাহান্নম হইতে বিদায়, বনী আদম, ওটেন সাহেবের বাংলো, কালরাত্রি খ-চিত্র, মুজিবনগর, দুই সৈনিক ও অন্যান্য। মৃত্যু -১৪ মে ১৯৯৮।