লেখক | কাজী নজরুল ইসলাম |
---|---|
বিষয় | বাংলা কবিতা বই |
প্রকাশক | কবি প্রকাশনী |
ISBN | 9789849919810 |
---|---|
পৃষ্ঠা সংখ্যা | 52 |
সংস্করণ | 1st Edition |
দেশ | বাংলাদেশ |
ভাষা | বাংলা |
বিবরণ | শুদ্ধতম কণ্ঠে জীবনানন্দ দাশ তাঁর সম্পর্কে লিখেছিলেন, ‘আধুনিক বাংলাদেশে তিনি বাংলার মাটির স্বায়ত্ত সন্তান।’ যিনি লিখেছিলেন- ‘গাহি সাম্যের গান, মানুষের চেয়ে বড় কিছু নাই, নহে কিছু মহীয়ান।’ সাম্যবাদী-সব্যসাচী- বিদ্রোহী কাজী নজরুল ইসলাম। আজন্ম লালন করেছেন অসাম্প্রদায়িক মানবচেতনা। অসম, অস্থিতিশীল এবং অবজায়ক্ষম পৃথিবীতে যে কবির অবস্থান সর্বদা বঞ্চিত-লাঞ্ছিতের পাশে, পক্ষে। উৎপাদনের কূটাভাষে ন্যায়ের পক্ষে, ইনসাফের পক্ষে তিনি অনড়। শ্রম ও পুঁজির অসাম্যের নিন্দায় যিনি দ্ব্যর্থহীন। নজরুলের সাম্যচিন্তার শ্রেষ্ঠ উদাহরণ সাম্যবাদীর কবিতা একাদশ। মানবিকতার প্রাসঙ্গিকতায় সোচ্চার হয়ে যেখানে নজরুল বলেছেন-মানবিকতাই মানুষের সবচেয়ে বড় ধর্ম। লিখেছেন মন্দির, মসজিদ, গির্জা বা অন্যান্য তীর্থক্ষেত্রের মতোই পবিত্র মানবহৃদয়। জাতি, ধর্ম, বর্ণ, লিঙ্গ নির্বিশেষে সকলের অধিকার প্রতিষ্ঠায় প্রচার করেছেন সাম্যবাদের বাণী। সমাজে উদার মানবতাবাদী পবিত্র আত্মার উদ্বোধনের কামনায় লড়েছেন তরবারির মতো ঝলসে ওঠা কলম হাতে। বাংলার মাটি থেকে জেগে, এই মৃত্তিকাকে সত্যিই ভালোবেসে, প্রান্তিক মানবধর্মের জয়ে শেষ নিঃসংশয়বাদী কবি ছিলেন তিনি। বিপ্লবে, বিদ্রোহে, সাম্যে বাংলার-বাঙালির আস্থার, ভরসার একান্ত আপনজন। ১৯২৫। সাম্রাজ্যবাদী রক্তচক্ষুকে হেলা করে, বিপ্লবের স্বপ্নে স্বরাজ দল গড়লেন নভেম্বরে। পরের মাসে প্রকাশ পেল একটি কবিতার বই ‘সাম্যবাদী’। সমতার স্বপ্ন, সাম্যের লড়াইয়ের আহ্বান জানিয়ে। সাহসী তেজোদীপ্ত কণ্ঠে ডাক দিলেন পরাধীনতার শৃঙ্খল মোচনের, শোষিত মানুষের মুক্তির সংগ্রামের। মুক্তির-সাম্যের-মর্যাদার লড়াইয়ের সাহসী-দৃঢ়-বলিষ্ঠ কাব্যিক এক ইশতেহার। সকল মত, সকল পথের উপরে যেথা স্থান পেয়েছে মানবিকতা। বৈষম্যহীন অসাম্প্রদায়িক মানবসমাজ প্রতিষ্ঠার আকাক্সক্ষায়, কাব্যের শিল্পগুণে, বিষয়বস্তুর ব্যাপ্তিতে, শতবর্ষ পেরিয়ে আজও অনন্য এক কাব্যগ্রন্থ। |
লেখকের নাম | কাজী নজরুল ইসলাম |
---|---|
পরিচিতি | কাজী নজরুল ইসলাম ২৪ মে ১৮৯৯ – ২৯ আগস্ট ১৯৭৬; ১১ জ্যৈষ্ঠ ১৩০৬ – ১২ ভাদ্র ১৩৮৩ বঙ্গাব্দ) বিংশ শতাব্দীর প্রধান বাঙালি কবি ও সঙ্গীতকার। তার মাত্র ২৩ বছরের সাহিত্যিক জীবনে সৃষ্টির যে প্রাচুর্য তা তুলনারহিত। সাহিত্যের নানা শাখায় বিচরণ করলেও তার প্রধান পরিচয় তিনি কবি তাঁর জীবন শুরু হয়েছিল সাধারণ পরিবেশে। স্কুলের গণ্ডি পার হওয়ার আগেই ১৯১৭ খ্রিষ্টাব্দে তিনি ব্রিটিশ ভারতীয় সেনাবাহিনীতে যোগ দিয়েছিলেন। মুসলিম পরিবারের সন্তান এবং শৈশবে ইসলামী শিক্ষায় দীক্ষিত হয়েও তিনি বড় হয়েছিলেন একটি ধর্মনিরপেক্ষ সত্তা নিয়ে। একই সঙ্গে তার মধ্যে বিকশিত হয়েছিল একটি বিদ্রোহী সত্তা। ১৯২২ খ্রিস্টাব্দে ব্রিটিশ সরকার তাকে রাজদ্রোহিতার অপরাধে কারাবন্দী করেছিল। তিনি ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের অধীন অবিভক্ত ভারতের বিদ্রোহী কবি হিসেবে পরিচিত হয়েছিলেন। যে নজরুল সুগঠিত দেহ, অপরিমেয় স্বাস্থ্য ও প্রাণখোলা হাসির জন্য বিখ্যাত ছিলেন, ১৯৪২ খ্রিষ্টাব্দে তিনি মারাত্মকভাবে স্নায়বিক অসুস্থতায় আক্রান্ত হয়ে পড়লে আকস্মিকভাবে তার সকল সক্রিয়তার অবসান হয়। ফলে ১৯৭৬ খ্রিষ্টাব্দে মৃত্যু অবধি সুদীর্ঘ ৩৪ বছর তাকে সাহিত্যকর্ম থেকে সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন থাকতে হয়। বাংলাদেশ সরকারের প্রযোজনায় ১৯৭২ খ্রিষ্টাব্দে তাকে সপরিবারে কলকাতা থেকে ঢাকা স্থানান্তর করা হয়। ১৯৭৫ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় বাংলা সাহিত্য ও সংস্কৃতিতে অসামান্য অবদানের জন্য তাকে সম্মানসূচক ডি.লিট ডিগ্রিতে ভূষিত করে। ১৯৭৬ সালে তাকে বাংলাদেশের জাতীয়তা প্রদান করা হয়। এখানেই তিনি মৃত্যুবরণ করেন। বিংশ শতাব্দীর বাঙালির মননে কাজী নজরুল ইসলামের মর্যাদা ও গুরুত্ব অপরিসীম। বাংলাদেশে তাকে “জাতীয় কবি“ হিসাবে মর্যাদা দেওয়া হয়। তার কবিতা ও গানের জনপ্রিয়তা বাংলাভাষী পাঠকের মধ্যে তুঙ্গস্পর্শী। তার মানবিকতা, ঔপনিবেশিক শোষণ ও বঞ্চনার বিরুদ্ধে বিদ্রোহ, ধর্মীয় গোঁড়ামির বিরুদ্ধতা বোধ এবং নারী-পুরুষের সমতার বন্দনা গত প্রায় একশত বছর যাবৎ বাঙালির মানস পীঠ গঠনে ভূমিকা রেখে চলেছে। |